পাঠ-পরিচিতি

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - বাংলা - সাহিত্যপাঠ | NCTB BOOK
1.9k
Summary

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উনিশ শতকের স্বনামধন্য লেখক। তাঁর "বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন" রচনা প্রথম প্রকাশ পায় ১৮৮৫ সালে 'প্রচার' পত্রিকায় এবং পরে 'বিবিধ প্রবন্ধ' গ্রন্থে অন্তর্ভুক্ত হয়।

এই প্রবন্ধে তিনি নতুন লেখকদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দেন, যা সকল সময়ের জন্য প্রাসঙ্গিক। লেখার উদ্দেশ্য হওয়া উচিত মানুষের কল্যাণ বা সৌন্দর্য সৃষ্টি, খ্যাতি বা অর্থ অর্জন নয়। তিনি অসত্য, নীতি-বিরুদ্ধ, এবং বিদ্বেষমূলক লেখা পরিহার করতে বলেছেন। লেখককে কিছু লিখে তাৎক্ষণিকভাবে প্রকাশ না করে পুনঃপাঠের জন্য অপেক্ষা করতে হবে যাতে লেখা সমৃদ্ধ হতে পারে।

অনুকরণ এবং অপ্রয়োজনীয় অলংকার রচনায় অদৃষ্ট করে তিনি। সারল্যকে সবচেয়ে বড় অলংকার মনে করেন। লেখকের আদর্শ এবং বস্তুনিষ্ঠার গুরুত্ব সম্পর্কে তিনি আলোচনা করেছেন। তাঁর পরামর্শ অনুসরণ করলে লেখক ও পাঠক উভয়ই উপকৃত হবে, যা আমাদের সৃজনশীলতা এবং মননশীলতা বৃদ্ধি করবে।

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উনিশ শতকীয় বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে পরিচিত। ‘বাঙ্গালার নব্য লেখকদিগের প্রতি নিবেদন” রচনাটি প্রথম প্রকাশিত হয় 'প্রচার' পত্রিকায়, ১৮৮৫ সালে; পরে এটি তাঁর ‘বিবিধ প্রবন্ধ' নামক গ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত হয়। সাধু রীতিতে লেখা এই প্রবন্ধটি আকারে ছোট হলেও চিন্তার মৌলিকত্বে অসাধারণ। বক্তব্যের তাৎপর্য বিচার করলে প্রবন্ধটির রয়েছে সর্বকালীন বৈশ্বিক আবেদন। নতুন লেখকদের প্রতি তিনি যে পরামর্শ এখানে উপস্থাপন করেছেন তার প্রতিটি বক্তব্যই পালনযোগ্য। খ্যাতি বা অর্থের উদ্দেশ্যে লেখা নয়; লিখতে হবে মানুষের কল্যাণ সাধন কিংবা সৌন্দর্য সৃষ্টির অভিপ্রায়ে। বঙ্কিমচন্দ্রের মতে, অসত্য, নীতি-নৈতিকতা বিরোধী কিংবা পরনিন্দার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা স্বার্থতাড়িত লেখা পরিহার করা বাঞ্ছনীয়। তিনি বলতে চান, নতুন লেখকরা কিছু লিখে তাৎক্ষণিকভাবে না ছাপিয়ে কিছুদিন অপেক্ষা করে পুনরায় পাঠ করলে লেখাটি সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। যার যে বিষয়ে অধিকার নেই সে বিষয়ে লেখার চেষ্টা করা যেমন অনুচিত তেমনি লেখায় বিদ্যা জাহির করার প্রবণতাকেও তিনি নিন্দনীয় বলে মনে করেছেন। অনুকরণবৃত্তিকেও দূষণীয় বলেছেন। অনাবশ্যকভাবে লেখার সৌষ্ঠব বৃদ্ধি বা পরিহাস করার চেষ্টাও তাঁর কাছে কাম্য নয়। সারল্যকেই তিনি সকল অলংকারের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অলংকার বলে মনে করেছেন। সর্বোপরি বস্তুনিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। এভাবে এই ছোট লেখাটিতে তিনি লেখকের আদর্শ কী হওয়া উচিত তা অত্যাবশ্যকীয় শব্দ প্রয়োগে উপস্থাপন করেছেন। নবীন লেখকরা বঙ্কিমচন্দ্রের পরামর্শ মান্য করলে লেখক ও পাঠক সমাজ নিশ্চিতভাবে উপকৃত হবেন; আমাদের মননশীল ও সৃজনশীল জগৎ সমৃদ্ধ থেকে সমৃদ্ধতর হবে ।

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...